পোশাক পরিষ্কার ও শুকানোর নিয়ম
—প্রকৃতি কর্মকার (রানিভাই) এবং কাজলকান্তি কর্মকার [M:9933066200]—
❓রঙিন পোশাক রোদে শুকোতে নেই কেন?
🧪 ১. সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মির (UV rays) প্রভাব। রঙিন কাপড়ে যে ডাই বা রঙ ব্যবহৃত হয়, তা একধরনের অণু-গঠনবিশিষ্ট রাসায়নিক পদার্থ। সূর্যের আলো, বিশেষ করে অতিবেগুনি (UV) রশ্মি, সেই অণুগুলিকে ভেঙে দেয় বা পরিবর্তন করে ফেলে। ফলে —রঙের উজ্জ্বলতা হারায়, ফিকে হয়ে যায়, অনেক সময় অন্য রঙের ছাপ পড়ে।
☀️ ২. তাপের প্রভাব দীর্ঘক্ষণ রোদে রাখলে কাপড়ের ফাইবার (বিশেষ করে সুতির বা সিন্থেটিক) শুকিয়ে শক্ত হয়ে যায়, ফেটে যেতে পারে। তাপের কারণে রঙের কণাগুলো ফাইবার থেকে আলগা হয়ে পড়ে, ফলে রঙ চটে যায় বা অসমান হয়।
💧 ৩. ভেজা অবস্থায় রোদে দেওয়া আরও ক্ষতিকর। ভেজা কাপড়ে থাকা জলবিন্দু ছোট ছোট লেন্সের মতো কাজ করে, সূর্যের আলোকে কেন্দ্রীভূত করে। এর ফলে কিছু জায়গায় রঙ দ্রুত জ্বলে যায় — কাপড়ের রঙে ছোপ বা দাগ পড়ে।
👕 ৪. রঙের ধরন অনুযায়ী প্রভাব। গাঢ় রঙ (যেমন নীল, কালো, লাল) সবচেয়ে দ্রুত ফিকে হয়। হালকা রঙ (যেমন সাদা, ক্রিম) তুলনামূলক কম প্রভাবিত হয়।
✅সমাধান: রঙিন পোশাক ছায়ায় বা উল্টো করে শুকানো ভালো। সরাসরি রোদে নয়, হাওয়া চলাচল করে এমন জায়গায় ঝুলিয়ে দিন। যদি রোদে দিতেই হয়, তবে উল্টো দিকটি (অর্থাৎ ভিতরের দিক) বাইরে রেখে দিন।
❓পোশাক কাচার পর নিকড়াতে নেই কেন?🧵 ১. কাপড়ের আঁশ (ফাইবার) ছিঁড়ে যায়। যখন আমরা ভেজা পোশাককে মুচড়ে নিকড়াই, তখন সেই সময় কাপড়ের ফাইবারগুলো টান খায়। ভেজা অবস্থায় ফাইবার সবচেয়ে দুর্বল থাকে। ফলে — ফাইবার ছিঁড়ে যায় বা ঢিলে হয়ে যায়, কাপড়ের গঠন ও স্থায়িত্ব কমে যায়, কয়েকবার পরেই কাপড় পুরনো বা বিকৃত দেখায়।
🌈 ২. রঙ উঠে যেতে পারে: নিকড়ানোর ফলে কাপড়ের গায়ে থাকা ডাইয়ের কণাগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ফলে— রঙ চটে যায়, পাশের কাপড়ে ছোপ ধরে, বিশেষত গাঢ় রঙের কাপড়ে রঙ অসমান হয়ে পড়ে।
👗 ৩. সেলাইয়ের জায়গায় চাপ পড়ে। নিকড়ানোর সময় কাপড়ের সবচেয়ে দুর্বল অংশ, যেমন— সেলাইয়ের গাঁট, কলার, হাতা বা পকেটের ধারে— সেগুলিতে অতিরিক্ত চাপ পড়ে। এতে সেলাই খুলে যায় বা আকার বিকৃত হয়।
💧 ৪. বিশেষত সিন্থেটিক ও রেশমের কাপড়ের জন্য ক্ষতিকর। এই ধরনের কাপড়ের ফাইবার খুব মসৃণ ও নরম হয়। নিকড়ালে এদের গায়ে চিরচিরে দাগ, চকচকে ছোপ বা কুঁচকে যাওয়া সমস্যা দেখা দেয়।
✅সমাধান: কাপড় নিকড়াবেন না — বরং হালকা চাপ দিয়ে জল ছেঁকে নিন। সম্ভব হলে তোয়ালে দিয়ে জল শুষে নিন, তারপর শুকোতে দিন। রেশম, উলের মতো কাপড় হলে শুধু ছায়ায় শুকোবেন, রোদে নয়।
❓ইলাস্টিক দেওয়া পোশাক রোদে বা তাপে বা গরম জলে দিতে নেই কেন?
🧬 ১. ইলাস্টিকের গঠন — রাবার বা স্প্যানডেক্স। ইলাস্টিক সাধারণত তৈরি হয়—রাবার (natural rubber) বা স্প্যানডেক্স / ইলাস্টেন (synthetic polymer) দিয়ে। এই পদার্থগুলো তাপে সংবেদনশীল, মানে একটু বেশি গরম পেলেই অণুর বন্ধন দুর্বল হয়ে যায়।
☀️ ২. রোদ বা তাপে রাখলে কী হয়। সূর্যের আলোয় থাকা UV রশ্মি এবং তাপ দুই-ই রাবারজাত ফাইবারকে নরম, পরে ভঙ্গুর করে ফেলে। ফলে — ইলাস্টিক ঢিলে হয়ে যায়, পরে ফেটে যায় বা ছিঁড়ে পড়ে, কোমর বা হাতার জায়গা টান হারায়, কাপড়ের আকার বিকৃত হয়।
💧 ৩. গরম জলে ধুলে রাসায়নিক বিক্রিয়া হয়। গরম জলে ধুলে ইলাস্টিকের উপাদানে থাকা পলিমার চেইন ভেঙে যায়। এর সঙ্গে ডিটারজেন্টের রাসায়নিক যুক্ত হয়ে আরও ক্ষতি করে। ফলে— ইলাস্টিক দ্রুত ক্ষয়প্রাপ্ত হয়, রঙিন হলে রঙও উঠে যায়।
🧵 ৪. বারবার তাপে শুকালে স্থায়ী ক্ষতি। একবার রোদে দিলে সামান্য নরম হয়, বারবার দিলে ইলাস্টিকের “memory” হারিয়ে যায়, অর্থাৎ আগের মতো টান আর ফিরে আসে না। এই কারণেই পুরোনো লেগিংস বা মোজায় টান না থেকে ঢিলেঢালা হয়ে যায়।
✅সমাধান: ইলাস্টিক দেওয়া পোশাক সবসময়— ঠান্ডা বা হালকা কুসুম গরম জলে ধুতে হবে, ছায়ায় শুকোতে হবে, সরাসরি রোদে নয়, শুকনো জায়গায় রাখতে হবে, যাতে বাতাস চলাচল করে, ইস্ত্রি করলে ইলাস্টিক অংশ এড়িয়ে যেতে হবে।
❓ কমদামি ডিটারজেন্ট দিয়ে পোশাক কাচতে নেই কেন?
🧪 ১. অতিরিক্ত ক্ষার (alkali) থাকার কারণে কাপড়ের ক্ষতি। অনেক সস্তা ডিটারজেন্টে অতিরিক্ত সোডা বা ক্ষারজাত পদার্থ মেশানো থাকে, যাতে দ্রুত ময়লা ওঠে। কিন্তু এতে— কাপড়ের ফাইবার দুর্বল হয়ে যায়, বারবার ধুলে ছিঁড়ে যাওয়া বা পাতলা হয়ে যাওয়া শুরু হয়, বিশেষ করে তুলো বা রেশমজাত পোশাকের গঠন নষ্ট হয়ে যায়।
🌈 ২. রঙিন পোশাকের রঙ উঠে যায়। এই ডিটারজেন্টগুলোতে সাধারণত pH ব্যালান্স থাকে না, আর তাতে থাকা সোডা বা ব্লিচিং এজেন্ট রঙের অণুগুলিকে ভেঙে দেয়। ফলে—রঙ চটে যায়, গাঢ় রঙের পোশাক ফিকে হয়ে পড়ে, এক পোশাকের রঙ অন্যটায় ছোপ ফেলে।
🧴 ৩. অবশিষ্ট সাবান বা গুঁড়ো জমে থাকে নিম্নমানের ডিটারজেন্ট সহজে গলে না, তাই ধোয়ার পর কাপড়ে সাদা দাগ বা পাউডারের আস্তরণ থেকে যায়। এর ফল— কাপড় শক্ত হয়ে যায়, ঘাম লাগলে ত্বকে চুলকানি বা অ্যালার্জি হতে পারে, কাপড় থেকে দুর্গন্ধও উঠতে পারে।
💧 ৪. ইলাস্টিক ও সিন্থেটিক ফাইবারের ক্ষতি। এই ধরনের ডিটারজেন্টে থাকা রাসায়নিক পদার্থ স্প্যানডেক্স বা পলিয়েস্টার জাত ফাইবারের অণুগুলো ভেঙে দেয়। ফলে ইলাস্টিক অংশ ঢিলে হয়ে যায় বা আকার বিকৃত হয়।
🧺 ৫. ধোয়ার সময় বেশি জল ও পরিশ্রম লাগে। নিম্নমানের ডিটারজেন্টে ফেনা বেশি, পরিষ্কার কম — ফলে ভালোভাবে ধোতে গেলে বারবার জল বদলাতে হয়, সময়ও বেশি লাগে।
✅ সমাধান: ভালো ব্র্যান্ডের, pH-balanced mild detergent ব্যবহার করুন। রঙিন বা নরম কাপড়ের জন্য লিকুইড ডিটারজেন্ট সবচেয়ে ভালো। কখনও ব্লিচযুক্ত ডিটারজেন্ট প্রতিদিনের কাপড়ে ব্যবহার করবেন না।
🌈 ২. রঙ উঠে যেতে পারে: নিকড়ানোর ফলে কাপড়ের গায়ে থাকা ডাইয়ের কণাগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ফলে— রঙ চটে যায়, পাশের কাপড়ে ছোপ ধরে, বিশেষত গাঢ় রঙের কাপড়ে রঙ অসমান হয়ে পড়ে।
👗 ৩. সেলাইয়ের জায়গায় চাপ পড়ে। নিকড়ানোর সময় কাপড়ের সবচেয়ে দুর্বল অংশ, যেমন— সেলাইয়ের গাঁট, কলার, হাতা বা পকেটের ধারে— সেগুলিতে অতিরিক্ত চাপ পড়ে। এতে সেলাই খুলে যায় বা আকার বিকৃত হয়।
💧 ৪. বিশেষত সিন্থেটিক ও রেশমের কাপড়ের জন্য ক্ষতিকর। এই ধরনের কাপড়ের ফাইবার খুব মসৃণ ও নরম হয়। নিকড়ালে এদের গায়ে চিরচিরে দাগ, চকচকে ছোপ বা কুঁচকে যাওয়া সমস্যা দেখা দেয়।
✅সমাধান: কাপড় নিকড়াবেন না — বরং হালকা চাপ দিয়ে জল ছেঁকে নিন। সম্ভব হলে তোয়ালে দিয়ে জল শুষে নিন, তারপর শুকোতে দিন। রেশম, উলের মতো কাপড় হলে শুধু ছায়ায় শুকোবেন, রোদে নয়।
❓ইলাস্টিক দেওয়া পোশাক রোদে বা তাপে বা গরম জলে দিতে নেই কেন?
🧬 ১. ইলাস্টিকের গঠন — রাবার বা স্প্যানডেক্স। ইলাস্টিক সাধারণত তৈরি হয়—রাবার (natural rubber) বা স্প্যানডেক্স / ইলাস্টেন (synthetic polymer) দিয়ে। এই পদার্থগুলো তাপে সংবেদনশীল, মানে একটু বেশি গরম পেলেই অণুর বন্ধন দুর্বল হয়ে যায়।
☀️ ২. রোদ বা তাপে রাখলে কী হয়। সূর্যের আলোয় থাকা UV রশ্মি এবং তাপ দুই-ই রাবারজাত ফাইবারকে নরম, পরে ভঙ্গুর করে ফেলে। ফলে — ইলাস্টিক ঢিলে হয়ে যায়, পরে ফেটে যায় বা ছিঁড়ে পড়ে, কোমর বা হাতার জায়গা টান হারায়, কাপড়ের আকার বিকৃত হয়।
💧 ৩. গরম জলে ধুলে রাসায়নিক বিক্রিয়া হয়। গরম জলে ধুলে ইলাস্টিকের উপাদানে থাকা পলিমার চেইন ভেঙে যায়। এর সঙ্গে ডিটারজেন্টের রাসায়নিক যুক্ত হয়ে আরও ক্ষতি করে। ফলে— ইলাস্টিক দ্রুত ক্ষয়প্রাপ্ত হয়, রঙিন হলে রঙও উঠে যায়।
🧵 ৪. বারবার তাপে শুকালে স্থায়ী ক্ষতি। একবার রোদে দিলে সামান্য নরম হয়, বারবার দিলে ইলাস্টিকের “memory” হারিয়ে যায়, অর্থাৎ আগের মতো টান আর ফিরে আসে না। এই কারণেই পুরোনো লেগিংস বা মোজায় টান না থেকে ঢিলেঢালা হয়ে যায়।
✅সমাধান: ইলাস্টিক দেওয়া পোশাক সবসময়— ঠান্ডা বা হালকা কুসুম গরম জলে ধুতে হবে, ছায়ায় শুকোতে হবে, সরাসরি রোদে নয়, শুকনো জায়গায় রাখতে হবে, যাতে বাতাস চলাচল করে, ইস্ত্রি করলে ইলাস্টিক অংশ এড়িয়ে যেতে হবে।
❓ কমদামি ডিটারজেন্ট দিয়ে পোশাক কাচতে নেই কেন?
🧪 ১. অতিরিক্ত ক্ষার (alkali) থাকার কারণে কাপড়ের ক্ষতি। অনেক সস্তা ডিটারজেন্টে অতিরিক্ত সোডা বা ক্ষারজাত পদার্থ মেশানো থাকে, যাতে দ্রুত ময়লা ওঠে। কিন্তু এতে— কাপড়ের ফাইবার দুর্বল হয়ে যায়, বারবার ধুলে ছিঁড়ে যাওয়া বা পাতলা হয়ে যাওয়া শুরু হয়, বিশেষ করে তুলো বা রেশমজাত পোশাকের গঠন নষ্ট হয়ে যায়।
🌈 ২. রঙিন পোশাকের রঙ উঠে যায়। এই ডিটারজেন্টগুলোতে সাধারণত pH ব্যালান্স থাকে না, আর তাতে থাকা সোডা বা ব্লিচিং এজেন্ট রঙের অণুগুলিকে ভেঙে দেয়। ফলে—রঙ চটে যায়, গাঢ় রঙের পোশাক ফিকে হয়ে পড়ে, এক পোশাকের রঙ অন্যটায় ছোপ ফেলে।
🧴 ৩. অবশিষ্ট সাবান বা গুঁড়ো জমে থাকে নিম্নমানের ডিটারজেন্ট সহজে গলে না, তাই ধোয়ার পর কাপড়ে সাদা দাগ বা পাউডারের আস্তরণ থেকে যায়। এর ফল— কাপড় শক্ত হয়ে যায়, ঘাম লাগলে ত্বকে চুলকানি বা অ্যালার্জি হতে পারে, কাপড় থেকে দুর্গন্ধও উঠতে পারে।
💧 ৪. ইলাস্টিক ও সিন্থেটিক ফাইবারের ক্ষতি। এই ধরনের ডিটারজেন্টে থাকা রাসায়নিক পদার্থ স্প্যানডেক্স বা পলিয়েস্টার জাত ফাইবারের অণুগুলো ভেঙে দেয়। ফলে ইলাস্টিক অংশ ঢিলে হয়ে যায় বা আকার বিকৃত হয়।
🧺 ৫. ধোয়ার সময় বেশি জল ও পরিশ্রম লাগে। নিম্নমানের ডিটারজেন্টে ফেনা বেশি, পরিষ্কার কম — ফলে ভালোভাবে ধোতে গেলে বারবার জল বদলাতে হয়, সময়ও বেশি লাগে।
✅ সমাধান: ভালো ব্র্যান্ডের, pH-balanced mild detergent ব্যবহার করুন। রঙিন বা নরম কাপড়ের জন্য লিকুইড ডিটারজেন্ট সবচেয়ে ভালো। কখনও ব্লিচযুক্ত ডিটারজেন্ট প্রতিদিনের কাপড়ে ব্যবহার করবেন না।
#ghatal #Daspur #Chandrakona #SDO #reporter ##news #reporter #Map #Kajalkanti #Garments #India #Generation # Gen_Z #Redcross #IRCS
💬কাজলকান্তি কর্মকার || রাজ্যের প্রথম শ্রেণির একটি বাংলা দৈনিক পত্রিকার সাংবাদিক
ঘাটাল || পশ্চিম মেদিনীপুর
MWT: 9933066200
eMail: ghatal1947@gmail.com
www.myghatal.com
www.myghatal.com
Comments
Post a Comment